আন্তর্জাতিক মানের থিম পার্ক রাইড তৈরি করছে রাহা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ

সার্কাস রাইডস, স্পিড উইন্ড হুইল সহ অন্যান্য এছাড়াও সরেজমিনে ফ্যাক্টরি প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, বিশাল এলাকা জুড়ে

বাংলাদেশের মাটিতেই তৈরি হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের থিম পার্ক রাইড যা বর্তমানে দেশের গন্ডি পেড়িয়ে বিদেশে রপ্তানির পথে। বর্তমানে রাহা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের দেশব্যাপি একাধিক কারখানা, থিম পার্ক এবং অফিস রয়েছে। ঢাকা হাজিরিবাগে রাহা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের কর্পোরেট অফিস হলেও এর কার্খানার দেখা মিলবে কেরানীগঞ্জে’র ঘাটারচরে।

সুবিশাল এই ফ্যাক্টরিটি ঘুরে দেখা যায় দিন রাত ২৪ ঘন্টা চলছে কাজ। নিরলস পরিশ্রম, আধুনিক চিন্তাভাবনা এবং একনিষ্ঠ ভালবাসার মাধ্যমে গড়ে তুলছে একেকটি রাইড কিংবা খেলনা। কোম্পানিটি থিম পার্ক রাইড তৈরি করে থাকে তবে থিম পার্ক বাদেও শিশু পার্ক, স্কুল কিডস জোন, রেস্টুরেন্ট কিড কর্নার এবং অন্যান্য শিশুদের খেলনা/রাইড প্রস্তুত করে থাকে।

রাহা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, বর্তমান, অতীত সম্পর্কে এর অপারেশন চিফ এক্সকিউটিভ মোঃ মাসুদ পারভেজ এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন “আমরা একটি বড় উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এ কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করছি। মূলত আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমরা দেশে আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন পণ্য (খেলনা/রাইড) উৎপাদন করছি। যার প্রায় সবই মডার্ন, আন্তর্জাতিক মানের, রপ্তানিযোগ্য। তবে আমাদের আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে আগামীতে আমাদের উৎপাদন আরও বাড়ানো হবে।”

আমাদের শুরু হয়েছিল ম্যানুয়াল রাইড তৈরি করার মাধ্যমে এই যেমন দোলনা, ইলেক্ট্রিক শাপলা রাইড, কিডস ট্রেইন সহ অন্যান্য আরও কিছু জিনিস নিয়ে। বর্তমানে আমরা দেশেই তৈরি করছি বাম্পার কার, রোলার কোস্টার, ওয়াটার রাইডস সহ আরও শত রকম রাইডস। সর্বচ্চো সেলিং প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে রয়েছে ওয়াস্টার্ন ট্রেন, হানি সুইং, ম্যারি গো সহ বেশ কিছু রাইড। অদূর ভবিষ্যতে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে আরও উন্নত মানের রাইড তৈরি করা যেমন ক্রেজি সার্কাস রাইডস, স্পিড উইন্ড হুইল সহ অন্যান্য এছাড়াও সরেজমিনে ফ্যাক্টরি প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, বিশাল এলাকা জুড়ে মোট তিনটি স্থানে এ প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কার্যক্রম চলছে। এছাড়া এ কোম্পানির উৎপাদন কার্যক্রম নিরবিচ্ছিন্ন করার জন্য নিজ উদ্যোগে সোলার বিদ্যুৎ, জেনারেটর, উইন্ড পাওয়ারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিকল্প ব্যাবস্থা রয়েছে। ফলে বিদ্যুতের অভাবে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কার্যক্রম কখনও বন্ধ থাকছে না।

উৎপাদন বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমাদের যে উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে তাতে আগামী কয়েক মাসের অগ্রীম অর্ডার নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া আমাদের নতুন ফ্যাক্টরি ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে ফলে অনেক মেশিন এখনও স্থাপন করা যাচ্ছে না তাতে প্রতিষ্ঠানের সম্প্রসারণ কিছুটা আটকে আছে। এ কাজগুলো সম্পন্ন করা সম্ভব হলে আগামী সাত-আট মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়ানো সম্ভব হবে বলে আমরা আশাবাদী।

কোম্পানির অগ্রগতির বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের অগ্রগতি অনেক ভাল। ২০০৮ সালে আমাদের যেখানে ছিল মাত্র ৩টা থিম পার্ক। কিন্তু বর্তমানে আমাদের প্রতিষ্ঠানের তত্বাবধায়নে দেশব্যাপি প্রায় ১৫টি ছোট-বড় থিম পার্ক রয়েছে। উৎপাদন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে পরিচালিত হলে আগামীতে মুনাফার পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে যারা কাজ করে তাদের অনেক সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়। দুপুরে খাওয়ার জন্য ভাল স্থান রয়েছে এছাড়া বিশ্রামের জন্য ভাল ব্যাবস্থা রয়েছে। কাজে যোগ দেওয়ার দিন থেকেই সর্বনিম্ন সাড়ে আট হাজার টাকা মজুরি ধরা হয়। তবে কাজের ভিন্নতা অনুযায়ী মাস শেষে ওভার টাইম হিসাব করে প্রায় ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা বেতন পায় শ্রমিকরা।

রাহা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে তাদের অফিসিয়াল ওয়েব-সাইট (www.rahaengineeringworkshop.com) ভিজিট করতে পারেন এছাড়াও সরজমিনে তাদের ফ্যাক্টরি ভিজিট করতে চলে যেতে পারেন রাজধানীর অদূরে কেরানীগঞ্জের ঘাটাচ্চরে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment